সংযোগ খবর। খেলাধুলা
তামিমের ইনজুরি নিয়ে গত তিন মাস ধরেই নানা ধরণের নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে তামিম বলেন, “আপনাদের একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে আমি কোন মাইন্ডসেট থেকে আসতেছিলাম।” নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ রান করার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, একটা ভাল ইনিংস খেলেছি আমি ভাল মাইন্ডসেটে ছিলাম। হঠাৎ করে আবার এসব ধরণের কথা আমার পক্ষে নেয়া সম্ভব না।
তিনি বলেন, “আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে ব্যাটিং করেছি, আমি জীবনে কোন দিন তিন-চারে ব্যাটিংই করিনি, এরকম যদি হইতো যে আমি তিনে ব্যাটিং করি, চারে ব্যাটিং করি, তারপরে যদি উপরে-নিচে করা হয় দ্যাট ক্যান বি অ্যাডজাস্টেবল। কিন্তু তিনে, চারে বা পাঁচে ব্যাটিং করার কোন অভিজ্ঞতাই আমার নাই। তখন আমি বললাম যে, আপনারা একটা কাজ করেন, আপনাদের যদি এরকম চিন্তা ধারা থাকে তাহলে আপনারা আমাকে পাঠায়েন না। আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। প্রতিদিন একেকটা নতুন জিনিস আপনারা আমাকে ফেস করাবেন, আমি এইটার মধ্যে থাকতে চাই না।”
আমি এই জিনিসটাই স্ট্রংলি বলছি যে, “এরকম যদি হয় এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। আপনারা দরকার হইলে আমাকে সিলেক্ট করিয়েন না। আমি এইগুলা মানতে পারবো না।” ভিডিও বার্তার শেষের দিকে তিনি বলেন, ফোনালাপে হওয়া কথাগুলো যদি তার সামনে অন্যভাবে উপস্থাপন করা হতো তাহলে হয়তো তিনি এটাকে মেনে নিতেও পারতেন। তবে হঠাৎ করে যদি কোন কারণ ছাড়া কেউ আপনাকে ফোন করে বলে যে আপনি খেলিয়েন না, বা খেললেও আপনাকে নিচে ব্যাট করানো হবে, তাহলে আমি জানি না যে সেটা কতটুকু ফেয়ার।”
নিজের ফিটনেসের বিষয়ে তামিম বলেন, লম্বা একটা সময় না খেলা এবং ইনজুরি থেকে সেরে ওঠার কারণে তার শরীরে অস্বস্তি এবং ব্যথা ছিল। প্রথম ম্যাচের পর তিনি শরীরে ব্যথা অনুভব করেছেন এবং খেলা শেষ হওয়ার পর তিনি বিষয়টি ফিজিওকে জানিয়েছেন। ঠিক সে মুহূর্তেই তিনজন নির্বাচক ড্রেসিং রুমে যায় বলেও তিনি জানান। তামিম দাবি করেন, তিনি নির্বাচকদের জানিয়েছিলেন যে তার শরীরে একটু ব্যথা থাকলেও শরীর যেমন আছে ঠিক তেমনি থাকবে। আপনারা (নির্বাচক) যখন টিমটা সিলেক্ট করবেন তখন এই বিষয়টা মাথায় রেখে সিলেক্ট করিয়েন,” বলেন তামিম। এটার কারণ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবসরের ঘোষণা দেয়ার আগে অধিনায়ক হিসেবে তিনি যে ম্যাচটি খেলেছিলেন সেখানে ইনজুরি একটা উদ্বেগ ছিল। এরপর তার ফিটনেস নিয়ে মিডিয়ায় নানা ধরণের মন্তব্য করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকেই বলেছে যে, “সে যদি ফিট না থাকে তাহলে খেলা উচিত না। এ কারণে তিনি আরেকটি বিতর্ক তৈরি করতে চাননি বলেই তিনি সিলেক্টরদের এমন কথা বলেছিলেন বলে জানান।
বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়ার পর ভিডিও বার্তা দেয়ার আগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেইজে তামিম ইকবাল বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় দল ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার পর একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি গত কয়েক দিনে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলবেন। পরে দেয়া ভিডিও বার্তায় তিনি পুরো ঘটনার বর্ণনা দেন এভাবে :-
আমাকে বোর্ডের টপ লেভেল থেকে একজন ফোন করলেন। উনি বেশ ইনভলড আমাদের ক্রিকেটের সাথে। উনি আমাকে ফোন করে হঠাৎ করে বললেন যে, তুমি তো ওয়ার্ল্ড কাপে যাবা, তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাইতে হবে। তুমি এক কাজ করো তুমি প্রথম ম্যাচ খেলিও না আফগানিস্তানের সাথে। তাকে প্রথম ম্যাচ খেলা থেকে বিরত থাকা বা নিচের দিকে ব্যাটিং করার বিষয়টি তিনি ভালভাবে নেননি উল্লেখ করে বলেন, “আমি উত্তেজিত হয়ে গেসিলাম। কারণ আমার বিষয়টি পছন্দ হয়নি। কারণ আমার মনে হয়েছে যে আমাকে জোর করে করে অনেক জায়গায় বাধা দেয়া হচ্ছে ইচ্ছা করে করে।” তবে টপ লেবেল থেকে কে ফোন দিয়েছিলো এ বিষয়ে তামিম ক্লিয়ার কিছু বলেননি এখোনো।
তামিমের ইঙ্গিত থেকে তিরটা যায় মূলত তিনজনের দিকে—বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান, ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান জালাল ইউনুস এবং টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ।
বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের মধ্যে এই তিনজনই জাতীয় দলের সঙ্গে সরাসরি এবং বেশি সম্পৃক্ত। তবে একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে জালাল ইউনুস বা খালেদ মাহমুদ নন, তামিমকে ওই প্রস্তাব দেওয়া ব্যক্তি স্বয়ং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। এ ব্যাপারে জানতে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি বিসিবি সভাপতিকে। প্রথম আলোর হোয়াটসঅ্যাপ বার্তারও জবাব দেননি তিনি।
সংযোগ সূত্র- বিবিসি বাংলা ও প্রথম আলো (প্রকাশ-২৭-০৯-২০২৩)
সংগ্রহে- খেলা সংযোগ বিভাগ/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য