সংযোগ খবর । আন্তর্জাতিক
হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর আক্রমণ ‘কেবল শুরু হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। অন্যদিকে হামাস হুমকি দিয়েছে যে বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক না করে যতবার বিমান হামলা চালানো হবে, ততবার একজন করে জিম্মি হত্যা করবে তারা। ফিলিস্তিনে স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে শুরু হওয়া এই হামলার জের ধরে এখন পর্যন্ত ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনে দুই পক্ষ মিলিয়ে দেড় হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত অন্তত ৯০০ জন। আর ফিলিস্তিনে এখন পর্যন্ত মারা গেছে প্রায় ৭০০ মানুষ।
হামাসের হুমকি
হামাসের সশস্ত্র অংশ আল কাসাম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামে এক বার্তার মাধ্যমে ইসরায়েলি জিম্মিদের হত্যার হুমকি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে: “পূর্ব সতর্কতা ছাড়া বেসামরিক আবাসস্থলে নতুন করে বোমা ফেলা হলে জিম্মি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদের হত্যা করা শুরু করা হবে।”
আল কাসামের মুখপাত্র আবু ওবাইদা টেলেগ্রাম পোস্টে মন্তব্য করেছেন: “ইসরায়েলের বিমান হামলায় শিশু, নারী আর বয়স্করা ঘরের ভেতরে থাকা অবস্থায় মারা গেছে।” “এখন থেকে খেলার নিয়ন্ত্রণ আর ইসরায়েলের হাতে নেই।” তবে সোমবার বিবিসি’র রেডিও ফোর’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান বাসেম নাইম মন্তব্য করেছেন যে জিম্মিদের সাথে ‘মানবিক ও সম্মানজনক ব্যবহার’ করবে তারা। জিম্মিদের সংখ্যা বলতে রাজি না হলেও তিনি জানান যে হামাস শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ দেইফ ‘বয়স্ক, বেসামরিক ও শিশুদের সম্মান করতে’ ও ‘যুদ্ধের সাথে জড়িত না থাকাদের হত্যা না করতে’ নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরায়েলের হুঁশিয়ারি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সোমবার রাতে এক বক্তব্যে বলেছেন যে: “আমরা তাদের শক্তভাবে দমন করবো। আমরা মধ্যপ্রাচ্য বদলে দেবো।”ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে ‘কঠিন ও ভয়াবহ’ পাল্টা হামলা করবে বলে দক্ষিণ ইসরায়েলের ক্ষতিগ্রস্থ একটি অঞ্চল পরিদর্শন করতে গিয়ে মন্তব্য করেন মি. নেতানিয়াহু। তার বক্তব্যে তিনি বলেছেন, “এটি কেবল শুরু হল। আমরা কঠোরভাবে তাদের দমন করবো।” ইসরায়েল এই সংঘাতের শুরু থেকেই দাবি করে আসছে যে গাজার হামাস ঘাঁটিতেই তারা আক্রমণ করছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী মঙ্গলবার ভোরে এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে জানিয়েছে যে শুধু সোমবারেই তারা হামাসের দুই হাজারের বেশি ঘাঁটিতে বিমান হামলা করেছে। এটি এখন পর্যন্ত গাজায় ‘হামাসের বিরুদ্ধে বৃহত্তম বিমান হামলা’ বলে দাবি করছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
মধ্যপ্রাচ্যের মিডিয়া যেভাবে এই হামলা তুলে ধরছে
মধ্যপ্রাচ্যের গণমাধ্যম সাম্প্রতিক এই সংঘাত যেভাবে তুলে ধরেছে তা বিশ্লেষণ করেছেন বিবিসি সংবাদদাতা ফ্লোরেন্স ডিক্সন। সৌদি আরবভিত্তিক আশরাক আল-আওসাত হামাসের এই হামলার সময়টিকে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব আর ইসরায়েলের মধ্যে একটি সমঝোতা প্রক্রিয়া গত কিছুদিন ধরে চলমান ছিল। পত্রিকাটি বলছে: “ইরান ঐ অঞ্চলে সত্যিকারের শান্তি চায় না। বিশেষ করে সৌদি-ইসরায়েল শান্তি চায় না, কারণ তা পুরো অঞ্চলের চেহারা পরিবর্তন করে দেবে।” অন্যদিকে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরা বলছে যে এই হামলা প্রমাণ করে যে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার জন্য ‘যোগ্যতা, সামর্থ্য ও রসদ’ রয়েছে হামাসের।আর ইসরায়েলের গণমাধ্যম আগে থেকে এই হামলার বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত না পাওয়ায় তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আর সেনাবাহিনীর প্রস্তুতির সমালোচনা করছে।
সংযোগ সূত্র- বিবিসি বাংলা/প্র:১০/১০/২০২৩/আ:স:বি:/জ:নি:
পাঠকের মন্তব্য