। এম আনিছুর রহমান ।
বাণী ও শুভেচ্ছা সংযোগ / জনসংযোগ.কম / ২৫-০১-২০২০
শিক্ষা হচ্ছে ধনাগার ও সংস্কৃতি হচ্ছে এর প্রকাশ, যার মৃত্যু নেই। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত ক্লাস হবে, পরীক্ষা হবে,মেধা অনুযায়ী প্রতিযোগীতা হবে এটাই স্বাভাবিক ও গতাণুগতিক বিষয় বরং প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গতাণুগতিক শিক্ষা কার্যক্রম কে অলঙ্কৃত করার জন্য অন্যান্য কি কি বিষয়ে ইতিবাচক চর্চা হয় তা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ্ বিষয়। শিক্ষাকে অলঙ্কৃত করার জন্য বিভিন্ন সংস্কৃতি বিষয়ক কার্যক্রম এর নিয়মিত আয়োজন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নীতি নির্ধারকদের বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত।দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিমাসে একবার করে হলেও বিভিন্ন সংস্কৃতি বিষয়ক আয়োজন থাকা উচিত, যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে বছরে অন্তত একবার করে হলেও “বাৎসরিক পূণর্মিলণী অনুষ্ঠান” আয়োজন কার্যক্রম, অধ্যয়নরত প্রতিটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনকে সত্যিকার অর্থে অলঙ্কৃত করবে বলে আমি মনে করি।তাছাড়া এ ধরনের পূণর্মিলণী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপন হয় যা অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক ভবিষ্যত নির্মাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।হাজী উসমান আলী উচ্চ বিদ্যালয়,ময়মনসিংহ নিজ শিক্ষা কার্যক্রম এর পঞ্চাশতম বর্ষে পদার্পণ করেছে এবং অদ্য ২৫ জানুয়ারি ২০২০ এ সূবর্ণ্ জয়ন্তী ও পূণর্মিলণী অনুষ্ঠান উদযাপন করছে, এ জন্য আমি অত্র বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহ সাবেক বর্তমান প্রত্যেক সম্মানিত শিক্ষককে এবং অনুষ্ঠান আয়োজক মন্ডলীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ প্রত্যেক সদস্যকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে- গত পঞ্চা্শ বছরে এই বিদ্যালয়টি মোট কতবার বিভিন্ন সংস্কৃতি বিষয়ক আয়োজন করেছে ? কতবার স্থানীয়/জেলা/বিভাগীয়/জাতীয় পর্যায়ে এ বিষয়ে মাইলফলক অতিক্রম করেছে ? যদি এর উত্তর সন্তোষজনক হয় তবে আমি এই বিদ্যালয়কে নিয়ে গর্বিত আর যদি এর উত্তর সন্তোষজনক না হয় তবে এই বিদ্যালয়কে নিয়ে আমি এই মর্মে আশাবাদী যে, তারা এই সূবর্ণ্ জয়ন্তী অনূষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে অন্তত প্রতিবছর একবার করে হলেও এ ধরণের আয়োজন নিয়মিত অব্যহত রাখবে এবং আয়োজনের এই ধারা অব্যহত রেখে এই বিদ্যালয়টি আগত হীরক জয়ন্তী উৎসব সহ একদিন শতবর্ষ্ উদযাপন করবে।অন্যদিকে নির্বাক সত্য এই যে, বেশীরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের একান্ত ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও বাজেট স্বল্পতা সহ নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে এ ধরণের অনুষ্ঠান নিয়মিত আয়োজন করা সম্ভবপর হয়ে উঠেনা, তবে একথাও মনে রাখতে হবে- প্রকৃত সংস্কৃতি প্রেমীরা কখনও সুযোগের আশায় বসে থাকেনা বরং তারা নিজ সংকল্প কে পূঁজি করে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে “সুযোগ” সৃষ্টি করে থাকে আর এখানেই তাদের জীবনের মূল স্বার্থকতা প্রতীয়মান হয়। কথায় আছে- “একটি খালি পেট, একটি খালি পকেট এবং একটি ভাঙ্গা হৃদয় মণুষ্যকূল কে যে শিক্ষা দেয়, কোন বই কখনও সেই শিক্ষা দিতে পারেনা” আর এই শিক্ষায় সবচেয়ে বেশী শিক্ষিত ও আলোকিত হল আমাদের দেশের বেশীরভাগ সংস্কৃতি প্রেমীরা।তাই কোন প্রকার উসিলা কে সামনে এনে কখনও সংস্কৃতি চর্চা বন্ধ করা যাবেনা। মনে রাখতে হবে “সংস্কৃতি বিহীন শিক্ষা যেমন-মুকুট বিহীন রাজাও তেমন”।
তাই ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্তত প্রতিবছর একবার “বার্ষিক পূণর্মিলণী অনুষ্ঠান” আয়োজন বাধ্যতামূলক বলে গণ্য হোক, এ প্রত্যাশায় আমি হাজী উসমান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মৃদ্ধি ও সূবর্ণ্ জয়ন্তী অনুষ্ঠানের সফলতা কামনা করছি, একইসাথে অত্র বিদ্যালয়ের প্রয়াত সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মন্ডলীর রুহের আত্নার মাঘফেরাত কামনা করছি।
ধন্যবাদ।
(৯৬-ব্যাচ,হাজী উসমান আলী উচ্চ বিদ্যালয়) ।
সম্পাদক - জনসংযোগ.কম
————————
jsongjugnews@gmail.com
fb.com- @jshongjog
পাঠকের মন্তব্য