গণমাধ্যম সংযোগ/জনসংযোগ,কম/২৬জানুয়ারি,২০২১
। নাঈমুল ইসলাম খান ।
[১] সিনিয়র সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নী সম্প্রতি এক প্রবন্ধে সাংবাদিকতায় নারীর উপস্থিতি নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করেছেন।
[২] শাহনাজ নিজেও বাংলাদেশের একজন প্রথিত যশা সাংবাদিক। তিনি জানিয়েছেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের ১২৫২ জন স্থায়ী সদস্যের মধ্যে নারী সদস্য সংখ্যা ৭২ জন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের ছয় হাজার সদস্যের মধ্যে নারী সংখ্যা ১৫০ জনের বেশি নয়। রিপোর্টার্স ইউনিটির ১৮০০-এর বেশি সদস্যের নারী মাত্র ১৪০ জন।
[৩] তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে শাহনাজ জেনেছেন, ইংরেজি বাংলা অনলাইনসহ প্রায় ২০০ গণমাধ্যমে কর্মরত নারী সম্পাদক আছেন ৬ জন। ২৮টি টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যে নারী হেড অফ নিউজ একজন, প্রধান বার্তা সম্পাদক একজন এবং বার্তা সম্পাদক মাত্র ২ জন নারী।
[৪] আমরা জানি এটিএন নিউজ মুন্নী সাহার নেতৃত্বে পরিচালিত অসাধারণ নিউজ টিভি চ্যানেল। এই প্রতিষ্ঠানে বেশ কয়েকজন সুযোগ্য নারী সাংবাদিক রয়েছেন।
[৫] এদিকে আমাদের সংবাদপত্র গ্রুপ ঢাকা শহর থেকে জাতীয় পর্যায়ে একটি ইংরেজি দৈনিক প্রকাশিত হয় নাম ‘ ডেইলি আওয়ার টাইম’। এই পত্রিকার সম্পাদক এবং প্রধান নির্বাহী সম্পাদকসহ সম্পাদকীয় সকল দায়িত্বে রয়েছেন নারী। কোনো পুরুষ দায়িত্বে নেই, এই রকম বাংলাদেশে এটিই একমাত্র দৈনিক সংবাদপত্র। সম্ভবত দক্ষিণ এশিয়াতেও এটি এমন একমাত্র দৈনিক পত্রিকা।
[৬] শাহনাজ মুন্নী জানিয়েছেন, রিপোর্টার্স ইউনিটির ২৫ বছরের ইতিহাসে কার্য নির্বাহী কমিটিতে সর্বোচ্চ ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে ২০০৫ সালে একবার মাহমুদা চৌধুরি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া ২০১১ সালে একটি নারী বিষয়ক সম্পাদকের পদ তৈরি করা হয় যেখানে নারীরা প্রতিনিধিত্ব করেন। এই পদের বাইরে সদস্য পদে এক দুই জন নারী নির্বাচিত হন। জাতীয় প্রেসক্লাবে ৬৬ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী, দুইবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন একজন, তিনি ফরিদা ইয়াসমিন।
[৭] ফরিদা ইয়াসমিন এবছর এবার নয়া ইতিহাস তৈরি করে প্রেস ক্লাবের প্রথম নারী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার সাথে নারী নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন দুইজন, শাহনাজ বেগম পলি এবং শাহনাজ সিদ্দিকী সোমা। এছাড়াও ডিপ্লোমেটিক বিটের প্রভাবশালী সাংবাদিক সংগঠন ‘ডিপ্লোমেটিক করেস্পন্ডেন্টস এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ডিক্যাব)’ এর শীর্ষ পদে (সভাপতি) ছিলেন আঙ্গুর নাহার মন্টি।
[৮] বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী ও সফল সাংবাদিক সংগঠন হচ্ছে ‘ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ঊজঋ). সম্প্রতি এই সংগঠনে প্রথমবারের মতো সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন একজন নারী, তার নাম শারমীন রিনভী, সিনিয়র সাংবাদিক। এছাড়া সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বি.এস.আর.এফ এর সহ-সভাপতি শাজাদা পারভিন সাজু। এছাড়া নিউজ ব্রডকাসটারস এসোসিয়েশনেরও নেতৃত্বে রয়েছেন নারী, মুমতাহিনা হাসনাত রিতু।
[৯] সিনিয়র সাংবাদিক নাসিমা খান মন্টি এখন ৪টি জাতীয় সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের সরকার স্বীকৃত সম্পাদক। পত্রিকাগুলো হচ্ছে (১) দৈনিক ‘আমাদের নতুন সময়’, (২) দৈনিক ‘আমাদের অর্থনীতি’, (৩) ইংরেজি দৈনিক ‘আওয়ার টাইম’, এবং (৪) আমাদের সময়.কম। সম্পাদক পদে নাসিমা খান মন্টি থাকলেও দৈনিক আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার কার্যকরী সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্বে আছেন সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি এবং ডেইলি আওয়ার টাইম পত্রিকায় প্রধান নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এডভোকেট তাসমিয়া নুহিয়া আহমেদ।
[১০] শাহনাজ লিখেছেন, গ্লোবাল মিডিয়া মনিটরিং প্রজেক্ট ২০১৫-এর প্রতিবেদনে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে নারী-পুরুষের বৈষম্যের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ৮৪ শতাংশ পুরুষ, আর নারী ১৬ শতাংশ। এর মধ্যে সংবাদপত্রে ৮ শতাংশ, রেডিওতে ৩৩ শতাংশ এবং টেলিভিশনে ১৯ শতাংশ নারী সাংবাদিক কাজ করেন।
[১১] শাহনাজ মুন্নীর মতে, গণমাধ্যমে সংবাদ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের বৈষম্য কম। যেমন, রেডিওতে ৬৭ শতাংশ ও টেলিভিশনে ৬৬ শতাংশ উপস্থাপিকা নারী। অর্থাৎ সার্বিকভাবে রেডিও ও টেলিভিশনে ৬৬ শতাংশ নারী ও ২৪ শতাংশ পুরুষ উপস্থাপক হিসেবে কাজ করেছেন।
অনুলেখক: ফাহমিদা তিশা
রচনার তারিখ: ১৮/১১/২০২০
সূত্র- সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খানের পেইজ থেকে সংগৃহীত।প্রকাশ-১০জানুয়ারী,২০২১। সংগ্রহে- গণমাধ্যম সংযোগ ডেস্ক/জনসংযোগ.কম
jsongjognews@gmail.com / fb.com- @jshongjog
পাঠকের মন্তব্য