বিশেষ সাক্ষাৎকার । স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ
বিশেষ সাক্ষাৎকার / প্রদানে- ডা: মো: টিটো মিঞা, প্রিন্সিপাল- মুগদা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ; (সাবেক অধ্যাপক , মেডিসিন - ঢাকা মেডিকেল কলেজ ) ।সাক্ষাৎকার গ্রহণে- এম. আনিছুর রহমান, সম্পাদক - জনসংযোগ নিউজ । ( বিষয়- করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতির সার্বিক পর্যালোচনা )
করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে গত ১৬এপ্রিল,২০২০ তারিখে জনাব ডা: মো: টিটো মিঞা মুঠোফোনের মাধ্যমে জনসংযোগ.কম কে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রদান করেন । তিনি করোনা বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন ও আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা বিষয় সহ এ রোগে মৃতব্যক্তির লাশ সৎকারের বিষয়েও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন । তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের মাঝে সমন্বয় ও সমঝোতা আরও বৃদ্ধিকরণের বিষয়েও বিশেষ প্রস্তাবনা প্রদান করেন । জনসংযোগ.কমের পাঠকদের জন্য পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হল -
(১). এম. আনিছুর রহমান- আমি প্রথমেই একটি সেনসিটিভ বিষয়ের উপড় প্রশ্ন করতে চাই, তা হল করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির লাশ দাফন বিষয়ে আতঙ্কিত বাঙ্গালীর নগ্ন সতর্কিত মনোভাব নিয়ে । ইদানিং আতঙ্কের মাত্রাটা এতই বেড়ে গেছে যে, অনেক মৃত ব্যক্তির আপনজনরা লাশ রাস্তায় ফেলে রাখছে, এমনকি ধারে কাছেও ভীড়ছেনা, উপরন্তু আপনজনদের বদলে জানাযা সহ লাশ সৎকার করতে হচ্ছে পুলিশকে । করোনায় মৃত ব্যক্তির লাশও কি এতটাই আতঙ্কের বিষয় ?
* ডা: মো: টিটো মিঞা- বিষয়টি খুবই দু:খজনক । আমি যতই এই বিষয়গুলো দেখছি ততই মর্মাহত হচ্ছি । মেডিকেল সাইন্সে মৃত ব্যক্তির মাঝ থেকে জীবাণু ছড়ানোর যথেষ্ট সাইন্টেফিক ব্যাখ্যা আছে । একজন মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর ০৪ (চার) ঘন্টা পরে তার বাহ্যিক দিকের বা শরীরের উপড়ের অংশে কোন জীবাণু বেঁচে থাকেনা কিন্তু মৃত ব্যক্তির শরীরের ভিতরের অংশের জীবাণুগুলো ৭২ (বাহাত্তর) ঘন্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকে । সারা পৃথিবীর মত আমাদের দেশেও প্রতিদিনই ত কত মানুষ কতরকম জীবাণুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে,যার যার ধর্মীয় বিধি অনুযায়ী নিয়মিত সৎকারও হচ্ছে কিন্তু জীবাণুর ভয়ে লাশ সৎকার নিয়ে এমন আতঙ্ক এই প্রথম দেখা যাচ্ছে কারন করোনা ভাইরাসটি সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম ও আতঙ্ক হবার মতই ভাইরাস ; এজন্যই মানুষের মাঝে লাশ সৎকার নিয়েও এত ভয়ভীতি লক্ষ করা যাচ্ছে । আতঙ্কিত না হয়ে একটু সতর্কতা অবলম্বন করলেই কিন্তু এ সংক্রান্ত লাশ সৎকারে কোন ঝুঁকি থাকেনা ।
(২) এম. আনিছুর রহমান- আমি সেই একটু সতর্কতা অবলম্বন বিষয়গুলো সম্পর্কেই জানতে চাচ্ছি ।
* ডা: মো: টিটো মিঞা- মানুষের যখন মৃত্যু হয় তখন তার মুখ দিয়ে লালা সহ অন্যান্য প্রতিটি ছিদ্রযুক্ত স্থান দিয়েই মল/ময়লা নির্গত হয়, মূলত জীবাণুগুলো সেকল ছিদ্রযুক্ত স্থান দিয়েই বাহিরে বের হয়ে আসে বা আসার সম্ভাবনা থাকে । ২৩মার্চ ২০২০ তারিখে iedcr থেকে প্রকাশিত মৃত করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির লাশ সৎকার নির্দেশনা (SOP) এর দ্বিতীয় সংস্করণে ৩.৫.৪ নির্দেশনায় আছে- “করোনা আক্রান্ত মৃতদেহের সৎকারের জন্য মৃতদেহের সকল ছিদ্রপথ (নাক,কান,পায়ুপথ ইত্যাদি)তুলা/গজ দিয়ে ভাল করে বন্ধ করে দিতে হবে যেন কোন তরল গড়িয়ে বের হতে না পারে ।মৃত্যুর স্থানেই মৃতদেহটিকে প্লাষ্টিকের কভার দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে এবং মুসলমানদের জন্য সাদা প্লাষ্টিক ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে, যদি তাৎক্ষণিক সাদা ব্যাগ পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে অন্য কালার ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারে, অন্যদিকে মৃতদেহকে প্লাষ্টিকের কভার দিয়ে এমনভাবে মুড়িয়ে রাখতে হবে যেন তা কভারের বাইরের সংস্পর্শে না আসে।”
(SOP) এর ৩.৫.৩ নির্দেশনা অনুযায়ী অনিয়ন্ত্রিতভাবে মৃতদেহ পরিস্কার/গোসল/ধোয়ানো যাবেনা । এব্যাপারে গত ২৪ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কর্তৃক প্রকাশিত infection prevention and control for the safe management of a body in the context of COVID-19 গাইড লাইনের আলোকে গত ৭এপ্রিল ২০২০ তারিখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত নির্দেশনা থেকে জানা যায় ; যদিও মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে অন্যব্যক্তির দেহে এই ভাইরাস সংক্রমনের এখনও কোন প্রমাণ নেই তথাপি এই অতি সংক্রমনশীল রোগ সংক্রমনের প্রতিরোধের জন্য মৃত ব্যক্তির ওজু/গোসলের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম পালন করা অতীব জরুরী -
* ১% সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড দ্রবণ/ব্লিচিং পাউডার দ্রবণ/সাবান পানি দ্রবণ (যেখানে যা পাওয়া যায়) স্প্রে মেশিন দিয়ে মৃতব্যক্তির গায়ের কাপড়ের উপড় দিয়ে ছিটানোর পর গায়ের জামা-কাপড় ও আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র খুলে Bio-hazard ব্যাগে ঢুকিয়ে নিয়ম অনুযায়ী পুড়িয়ে ফেলতে হবে । অত:পর এই দ্রবণ মৃতব্যক্তির গায়ে ছিটিয়ে প্রতিকী গোসল করানো যেতে পারে ।
* যেখানে জীবাণুনাশক দ্রবণ অপ্রতুল্য সেখানে সাবান-পানি দিয়ে সময় নিয়ে ভালকরে গোসল করাতে হবে ; সাবান-পানি দিয়ে ভালকরে গোসল করালে ভাইরাস বেঁচে থাকতে পারেনা । এক্ষেত্রে মৃতদেহ ধোয়ার জন্য ব্যবহৃত পানি নির্দিষ্ট গর্তে ফেলে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে অবশ্যই মাটি চাপা দিতে হবে । প্রয়োজনে গোসলের পরিবর্তে তায়াম্মুম করা যেতে পারে । উল্লেখ্য- গত ২৪এপ্রিল,২০২০ তারিখে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক এর কক্ষে অনুষ্ঠিত এক জরুরী সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ মৃত ব্যক্তির গোসল বিষয়ে এই মর্মে মতামত প্রদান করেছেন যে, “ ইসলামী শরীয়তে কোন কারনে অযু/গোসল সম্ভব না হলে বিকল্প হিসেবে তায়াম্মুম এর বিধান আছে, তাই মৃত ব্যক্তিকে গোসল করানো সম্ভব না হলে সুরক্ষা পদ্ধতি অবলম্বন করে তায়াম্মুম করানো যায়, এ মর্মে গত ২৫এপ্রিল ২০২০ তারিখে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক-গবেষনা বিভাগ, জনাব নূর মোহাম্মদ আলম সাক্ষরীত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় । পরবর্তীতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লিখিত অনুরোধের ফলে তায়াম্মুম এর বিষয়টি আইইডিসিআর (SOP) এ সংযোজন করে ।
* করোনা আক্রান্ত মৃতব্যক্তিকে গোসল করানোর সময় যিনি গোসল করাবেন তিনি যেন মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও একটি ডিসপোজেবল গাউন/পিপিই পরিধান করে গোসল করান এবং গোসল করানোর পর একটু বেশী সময় নিয়ে সাবান/ডিটারজেন্ট দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলেন তাহলে আর সংক্রমন হওয়ার কোন ভয় থাকেনা, আর যদি তিনি নিজে জীবাণুনাশক সাবান দিয়ে গোসল করে ফেলেন তাহলে শতভাগ ঝুঁকি থাকেনা । তবে ব্যবহুত সেসকল মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও পরিধেয় ডিসপোজেবল গাউন দ্বিতীয়বার ব্যবহার না করে পুড়িয়ে ফেলাই উত্তম হবে আর যদি দ্বিতীয়বার ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে সেগুলো ডিটারজেন্ট/সাবান পানি দিয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে পরবর্তীতে ধুয়ে ফেলতে হবে ।এক্ষেত্রে মাস্ক হাতের কাছে না থাকলে তিন লেয়ার বিশিষ্ট রুমাল/গামছা এবং গ্লাভস পাওয়া না গেলে ২/৩ স্তর বিশিষ্ট পলিব্যাগ দিয়ে হাত মুড়িয়ে কাজ করতে হবে । যদি ডিসপোজেবল গাউন/পিপিই না থাকে সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে রেইনকোট / পানি নিরোধক প্লাষ্টিক দিয়ে শরীর মুড়িয়ে সৎকার কার্যক্রম সম্পন্ন করা যেতে পারে ।
* করোনা আক্রান্ত মৃতের পরিবারকে অবশ্যই মুখ দেখানো যাবে, তবে এক্ষেত্রে সকলকে অবশ্যই মাস্ক পড়তে হবে ও কমপক্ষে ৩(তিন) ফুট দুরত্বে অবস্থান করতে হবে, তবে কোন অবস্থাতেই মৃতদেহকে শ্পর্শ করা যাবেনা । বয়স্ক ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা যাদের আছে তাদেরকে লাশ দেখা থেকে বিরত থাকতে হবে ।
* করোনা মৃতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত সকল সরঞ্জামাদি,মৃতদেহ থেকে নি:সৃত বর্জ্য, মৃতদেহ গোসল করানো স্থান, মৃতদেহ বহনকারী খাটিয়া/গাড়ী ইত্যাতি সংক্রমণ প্রতিরোধে বিধি অনুযায়ী ১% সোডিয়াম হাইপোক্লারাইড/ব্লিচিং পাউডার/ডিটারজেন্ট বা সাবান পানি দিয়ে ভালকরে ধুয়ে ফেলতে হবে । মৃতদেহের জন্য যদি আলাদা কোন কাপড় ব্যবহার করা হয় তবে সেগুলোও কবরেই রেখে দিতে হবে অথবা কফিন সহ মৃতদেহ কবরস্থ করা যাবে । সনাতন ধর্মালম্বীদের ক্ষেত্রে ভষ্মকৃত দেহাবশেষ/ছাই থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ায়না । তাই সকল ধর্মালম্বীদের ক্ষেত্রেই সতর্কতার সহিত লাশ দাফন/সৎকার করলে কোভিড-১৯ আক্রান্ত মৃতদেহ থেকে ভাইরাস ছড়ায়না ।
(৩) এম. আনিছুর রহমান- যদি এইটুকু সতর্কতা অবলম্বেনেও দেশের মানুষ আতঙ্কিত থাকে সেক্ষেত্রে করণীয় কি ?
* ডা: মো: টিটো মিঞা- সেক্ষেত্রেও এই মূহুর্তে আর ভাবনার কোন কারন নেই । সরকার ইতিমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এ বিষয়ে বিশেষকিছু টিমকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে । এক্ষেত্রে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম এর বেশ কিছু টিম ঢাকা সহ সারা দেশে এই কাজ করছে । বিশেষ করে বাংলাদেশ পুলিশ ও সরকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরকেও এ ব্যাপারে বিশেষ প্রশিক্ষন দেয়া হচ্ছে । আপনি লক্ষ করবেন- বিশেষ করে বাংলাদেশ পুলিশ এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে । তাই যদি এইটুকু সতর্কতা অবলম্বনেও সাধারন মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হয় তাহলে সরাসরি স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা / জনপ্রতিনিধিদের অবগত করলেই তারা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে । আমি আবারও বলছি, এক্ষেত্রে কোনভাবেই আতঙ্কিত হয়ে মৃত ব্যক্তিকে অশ্রদ্ধা করে যেখানে সেখানে ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়াটা খুবই ন্যাক্কারজনক । যদি জীবিত করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে তিন ফুট দূরে থাকলে নিরাপদে থাকা যায় তাহলে মৃত ব্যক্তির কাছ থেকেও তিন ফুট দূরে থাকলে আরও বেশী নিরাপদে থাকা যাবে বলে আমি মনে করি । তাই লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে মৃত ব্যক্তিকে অসম্মান করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক । এক্ষেত্রে সরকারের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টিম বিধিমোতাবেক সৎকারের ব্যবস্থা করবে এবং আপনজনরা নির্ধিধায় ৩ফুট দুরত্বে অবস্থান করে জানাযায় অংশ নিতে পারবে । তাই আপনজনদের মৃত্যুর পর শেষ বিদায়টুকু যেন সম্মানের সহিত দিতে পারি, আসুন আমরা এই মর্মে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
(৪) এম. আনিছুর রহমান- আপনার দেয়া যুক্তিসংঘত তথ্যের ভিত্তিতে করোনা আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের সৎকারের বিষয়ে একটি পজেটিভ স্বিদ্ধান্তে আমরা পৌঁছাতে পেরেছি মনে হয়, তাই এবার আসছি করোনা আক্রান্ত জীবিত ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে । প্রশ্ন হচ্ছে- আমরা জানি যে এখনও পর্যন্ত সতর্ক থাকা ব্যাতিত এই রোগের কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, কিন্তু আইইডিসিআর এর প্রতিদিনের বুলেটিনে রোগী সনাক্ত ও মৃত্যুর পাশাপাশি চিকিৎসায় অনেক ব্যক্তিই সুস্থ হয়ে বাড়ী ফিরছে, তাহলে এ ক্ষেত্রে আসলে চিকিৎসা দ্বারা সুস্থ হওয়া মানে কি ? মূলত ভিতরে কি চিকিৎসা হচ্ছে তা যদি প্রকাশ করা হত তাহলে মনে হয় দেশের মানুষ এ ব্যাপারে আরও গতিশীল হত বা ঘরোয়া চিকিৎসায় মনোযোগী হত, আতঙ্কিত হওয়ার মাত্রাও কমত, হসপিটালে ভীরও কমত, একটি বিষয় স্পষ্ট যে, জ্যামিতিক হার অব্যাহত থাকলে অতি নিকটবর্তী ভবিষ্যতে চিকিৎসা দেওয়া ও লাশ সৎকার করা উভয় ক্ষেত্রেই আমাদের ধৈর্য হারাতে হবে, এক্ষেত্রে আপনি কি মনে করেন ?
* ডা: মো: টিটো মিঞা- অবশ্যই সতর্ক থাকা ব্যাতিত এই রোগের কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার ব্যাপারে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এখনও কোন স্বিদ্ধান্তে আসতে পারেনি তবে রোগীর আক্রান্তের সময়সীমা ও বডি কন্ডিশন বিবেচনা করে who এর আপডেট নির্দেশনা অনুযায়ী ও উন্নত বিশ্বের চলমান চিকিৎসা প্রক্রিয়া অনুযায়ীই আমাদের দেশের করোনা আক্রান্তদেরকে বিশেষ স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে । ভাইরাসটি প্রতিনিয়তই পরিবেশ/স্থানকাল ভেদে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় এর আক্রমনাত্বক গতিবিধি পরিবর্তন করছে, সেগুলো বিবেচনা করে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিনিয়ত এই ব্যাপারে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় আপডেট দিচ্ছে, মূলত সবদেশের রোগীদের পর্যালোচনা করে গবেষনা চলছে এর সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য, তাই স্পেসিফিকভাবে কোন একটি চিকিৎসা ব্যবস্থা পদ্ধতি তুলে ধরা যাচ্ছেনা, কিন্তু এটুকু নিশ্চিত করে বলা যায়, আইইডিসিআর খুব সতর্কতার সহিত who এর আপডেট নির্দেশনা অনুযায়ীই কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা পরিচালনা করছে । তবে এসকল চিকিৎসা চলাকালীন সময় রোগীদের মনোবল প্রায় শতভাগ ভেঙ্গে পড়তে দেখা যায়, যদি এসময় রোগীদের মনোবল শক্ত ও দৃঢ় রাখা যায় তাহলে চিকিৎসা ব্যবস্থা দ্রুত ফলপ্রসু হয় । এক্ষেত্রে যদি প্রিন্ট/ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো দেশের প্রখ্যাত সা্ইকোলজিষ্টদের বিশেষ পরামর্শক্রমে বিভিন্ন মোটিভেশনাল বিজ্ঞাপন বা প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করে তাহলে বিষয়টি করোনা চিকিৎসা সেবায় খুবই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। একজন করোনা আক্রান্ত রোগী যখন চিকিৎসাধীন থাকবে তখন সেইসব মোটিভেশনাল ভয়েসগুলো তার মনোবল বৃদ্ধি করবে । অন্যদিকে যদি সাইকোলজিষ্টগণ বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে সিরিয়াস রোগীদের সামনে সরাসরি উপস্থিত হয়ে মোটিভেট করার চেষ্টা করেন তাহলে করোনা চিকিৎসায় আরও একটি বিশেষ সফলতা যোগ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি ।
(৫) এম. আনিছুর রহমান- এবার আসছি সম্পূর্ণ সুস্থ ব্যক্তিদের প্রসঙ্গে । তাদেরকে সম্পূর্ণ সুরক্ষার ব্যাপারে এই মূহুর্তে সবচেয়ে জরুরী পদক্ষেপ কোনটি বলে আপনি মনে করেন বা সরকারের পক্ষ থেকে আরও কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সুস্থদের জন্য আরও ইতিবাচক হবে ?
* ডা: মো: টিটো মিঞা- এখনও যারা সুস্থ আছেন তাদেরকে সর্বপ্রথম মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করা উচিত যে তারা এখনও সুস্থ আছেন । এটা মহান সৃষ্টিকর্তার তাদের প্রতি অশেষ রহমত, সৃষ্টিকর্তার এই পরম নিয়ামতকে যারা ইতিবাচক হিসেবে না নিয়ে নেতীবাচক হিসেবে নিবেন তাদের জন্য সরকার আর কোন জরুরী পদক্ষেপ নিতে পারবেনা । বর্তমান সরকার প্রধান এই ব্যাপারে যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোও নজরকারা পারফর্মেন্স দেখিয়েছেন, এখন যদি এর চেয়ে বেশী তাদেরকে কঠোর হতে হয় তাহলে লাঠিচার্জ বা গুলি প্রদর্শন করতে হবে, আর তা যদি কোথাও হয় তাহলে দেশের এক শ্রেণীর প্রতিবাদী জনগোষ্ঠীর সাথে লড়াই করতে হবে, আর তাহলে দেশের সার্বিক পরিস্থিতির মারাত্নক অবনতি ঘটবে । তাই এবার সরকার নয় বরং এখন জনগনের বা সুস্থদের সময় এসেছে সরকারকে সহযোগীতা করার, তারা যদি শুধুমাত্র আরকিছু দিন নিজেদেরকে নিজেরাই অন্তত আরও চারটি সপ্তাহের জন্য ফুল লকডাউন করে ফেলে অর্থাৎ নতুন করে আর কোন ব্যক্তি আক্রান্ত না হয় তাহলে এই বিশ্বযুদ্ধে বাংলাদেশ জিতে যাবে নয়ত বাংলাদেশের পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করবে । তাই এবার সুস্থ জনগণকেই স্বিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তারা বাঁচবে না মরবে, বাকীটা সরকার সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রাখে । ইতিমধ্যে সরকার প্রচুর খাদ্যদ্রব্য বিতরন সহ বহু খাতে প্রনোদনা ঘোষনা করেছে, লাগলে আরও করবে, সেই মানসিকতা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আছে, এ নিয়ে ঘাবরানোর কিছু নেই । তাই সুস্থদের প্রতি আমার শেষ পরামর্শ হচ্ছে- “ ধরে নিন এখন এই মূহুর্ত থেকেই আপনি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত, তাই ঘন ঘন কুসুম গরম পানি/চা/কফি পান করুন এবং কিছুক্ষণ পরপর লবণ ও কুসম গরম পানি দিয়ে ঘারঘিল করুন, ঘনঘন সবান/ডিটারজেন্ট দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে হাত ধৌত করুন, প্রয়োজনে মানসম্মত হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার করুন ও মাঝে মাঝে নাকমুখ দিয়ে ষ্টিম ওয়াটার নিন । বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিত বহিরে গমন না করে যেভাবে পারুন নিজেকে ফুল লকডাউনে রাখুন । লক ডাউন ইজ দ্যা বেষ্ট ট্রিটমেন্ট এগেইনষ্ট কোভিড-১৯ । তাহলে অবশ্যই করোনা আপনার সচেতনতার কাছে হেরে যাবে নয়ত এর ব্যতিক্রম ঘটলে আপনিই করোনার কাছে হরে যাবেন‘’।
(৬) এম. আনিছুর রহমান- আমরা ইতিমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন ধাতব ও অন্যান্য পদার্থে অবস্থান এর সময়সীমা সম্পর্কে জানতে পেরেছি কিন্তু তা বিভিন্ন পোষ্টে/মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য দেখা যাচ্ছে । মূলত: এ বিষয়ে আপনার মাধ্যমে একটি নির্ভরযোগ্য তথ্য চাচ্ছি ।
* ডা: মো: টিটো মিঞা- * কোভিড-১৯ মুলত ৪ডিগ্রিী সে. তাপমাত্রায় (ফ্রিজের ভেতর-স্থিতিশীল)অবস্থায় থাকে ১৪ দিন, * ৩৭ ডি.সে. (দেহের তাপমাত্রায়)২ দিন, * ৫৬ডি.সে.(কুসুম গরম পানিতে)৩০ মিনিট, * ৭০ ডি.সে. তাপমাত্রায় ৫ মিনিট, * ছাপার কাগজ/টিস্যু পেপার-এ ৩ ঘন্টা, * পয়সা (তামা)তে ৪ ঘন্টা, * কার্ডবোর্ড বা প্যাকিং বাক্স-এ ১ দিন, * কাঠ/কাপড়-এ ২ দিন, * কাঁচ/ষ্টেইনলেস ষ্টিল/টাকা তে ৪ দিন, * প্লাষ্টিক-এ ৭ দিন, এবং * সার্জিকেল মাস্কের বাইরের আবরণে ৭ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে । সূত্র- The new England journal of medicine.
(৭) এম. আনিছুর রহমান- ইতি টানতে হচ্ছে, শেষ প্রশ্নটি হচ্ছে- এই বিশ্ব যুদ্ধের যুদ্ধাদেরকে নিয়ে অর্থাৎ আপনাদের পারফর্মেন্স নিয়ে । যেসকল চিকিৎসকগণ এই যুদ্ধে জীবন বাজী রেখে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তাদেরকে শতসহস্র সেল্যুট । প্রতিটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানগণ তাদেরকে স্বয়ং সেল্যুট দিচ্ছেন এবং বিশেষ পুরস্কারেরও ঘোষনা দিচ্ছেন, এ থেকে পিছিয়ে নেই আমাদের দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও । ইতিমধ্যে সরকার এ বিষয়ে যথেষ্ট ইতিবাচক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন এবং উন্নত বিশ্বের সাথে যতটুকু সম্ভব সামঞ্জস্য বজায় রেখে আমাদের দেশের চিকিৎসকগণও প্রতিনিয়ত ফাইট করে যাচ্ছেন কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে, উল্লেখ্য- সিলেটের ডা: জনাব মইনউদ্দিন কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, ফলে চিকিৎসকদের সুরক্ষার বিষয়টি আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে, তাই এই ব্যবস্থাপনা যেন আরও গতিশীল হয় এবং দেশের সকল ডাক্তারগণ যেন একযোগে এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে আরও কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে আপনি মনে করেন ?
* ডা: মো: টিটো মিঞা- এব্যাপারে প্রথমেই আমি যে-কথাটি বলতে চাই তা হলো- বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা প্রদানে যেসকল দেশগুলো প্রথম সাড়িতে অবস্থান করছে সেকল দেশগুলোই কোভিড-১৯ মোকাবেলায় রিতিমত হিমশিম খাচ্ছে, এমনকি তারা বর্তমানে ধৈর্য হারিয়ে আকাশের পানেও চেয়ে আছে, সেখানে আমাদের এই উন্নয়নশীল দেশে অতি দ্রুত বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়ে দেশের সরকার ও চিকিৎসকগণ যৌথভাবে যে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে যাচ্ছে সেজন্য আমি সরকার ও সরাসরি কোভিড-১৯ চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসকগণকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই । যেহেতু সংক্রমণ জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেহেতু খুব দ্রুত সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকগণ এর মাঝে পারস্পরিক সমন্বয় আরও বৃদ্ধি করতে হবে, এই মূহুর্তে এর কোন বিকল্প নেই ।
লক্ষণীয় বিষয় হলো ডা: মইনউদ্দিনের মৃত্যু, আমি গভীরভাবে তার মৃত্যুতে শোকাহত । এক্ষেত্রে চিকিৎসকগণের সুরক্ষার ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, ব্যক্তিগত সুরক্ষার অভাবে যদি চিকিৎসকগণের মধ্যেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে যায় তাহলে এই মূহুর্তের দেশের প্রধান নির্ভরতার জায়গাটিই হুমকির মুখে পড়ে যাবে । একজন চিকিৎসক যতক্ষণ পর্যন্ত নিজেকে শতভাগ সুরক্ষিত মনে না করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি অন্তত এই ভয়ানক কোভিড-১৯ যুদ্ধে নিজেকে সরাসরি আত্ননিয়োগ করতে পারবেননা, এক্ষেত্রে নিজের জীবনের ভয় ছাড়াও তার মাধ্যমে ভাইরাসটি অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ারও ভয় আছে । প্রতিটি ডাক্তার মানবসেবার শপথ নিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করে, সেই দিক বিবেচনায় তিনি নাহয় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিলেন কিন্তু সুরক্ষিত সরঞ্জাম এর অভাবে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয়হীনতার কারণে তার মাধ্যমেই এই ভাইরাস অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ুক, তার মাধ্যমে অন্যকোন প্রাণহানি ঘটুক, তা কোন সচেতন চিকিৎসকই চাইবেননা । এজন্য ইচ্ছে থাকা স্বত্বেও অনেক চিৎিসকগণ সরাসরি চিকিৎসা সেবায় দ্বিধাদ্বন্দে আছেন মাত্র, কোন চিকিৎসক কখনই চিকিৎসা সেবা প্রদানের ভয়ে পালিয়ে যেতে পারেননা, কোন চিকিৎসক কখনই চাননা কোন পেশেন্ট চিকিৎসার অভাবে দ্বারে দ্বারে ঘুরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ুক । এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের মাঝে বর্তমানে যতটুকু সমন্বয় আছে তা প্রসংশনীয় হলেও নিকটবর্তী ভবিষ্যতের ভয়াবহতা বিবেচনা করে নি:স্বার্থভাবে উভয়ের মাঝে দ্রুত পারস্পরিক সমন্বয় ও সমঝোতা আরও বৃদ্ধি করতে হবে ।
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- এই ঘাতক ভাইরাসের বিরুদ্ধে অজানা ও অনিশ্চিত স্বাস্থসেবা দ্রুত নিশ্চিত করতে আমাদের কিছুটা ছন্দপতন হলেও দেশের বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠী ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিক সহযোগীতায় চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রী ও তাদের জন্য অন্যত্র রেসিডেন্সের ব্যবস্থা প্রণয়নে খুব দ্রুত ইতিবাচক স্বিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ায় আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি । তাই বর্তমান সময় পর্যন্ত সবকিছু মোটামোটি স্থিতিশীল থাকলেও আসন্ন ভয়াবহতার কথা বিবেচনা করে চিকিৎসাসেবায় চিকিৎসকদের শতভাগ মনোনিবেশের জন্য মানসম্মত পিপিই সহ অন্যান্য সকল সুরক্ষা সামগ্রীর যথেষ্ট মজুদ ও বিতরন জরুরী হয়ে পড়েছে, সেইসাথে এই চিকিৎসা প্রদানকারী সকল ডাক্তার,নার্স সহ অন্যান্য সকল চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা সেবকদের জন্য অন্যত্র রেসিডেন্সের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণও অতীব জরুরী কারণ এই ক্ষেত্রে সরাসরি চিকিৎসা সেবকদের দিনশেষে নিজ পরিবারে প্রত্যাগমন কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় । তাই চিকিৎসক ও চিকিৎসকদের পরিবার উভয়ের সুরক্ষার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বর্তমানের চেয়ে আরও সংবেদশীল হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি । তাহলেই কেবল দেশের সমগ্র চিকিৎসকগণ একযোগে দৃঢ় মনোবল নিয়ে নিজ নিজ কর্মস্থলে চিকিৎসা সেবা চলমান রাখতে পারবে বলে আমি দৃঢ়চিত্তে আশাবাদী ।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে ভেন্টিলেটর । আমাদের একটি ভুল ধারনা আছে যে, অধিক ভেন্টিলেটর থাকলেই অনেক রোগীকে বাঁচানো যাবে, এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা । যেসকল রোগী ভেন্টিলেটরে চলে যায় সেখান থেকে খুব কম রোগীই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে, তাই আমাদেরকে চিকিৎসা পদ্ধতিটা এমনভাবে করতে হবে যেন কোন রোগী ভেন্টিলেটর পর্যন্ত না যায় । দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর ও আইসিইউ এর ব্যবস্থা আছে তবে যেভাবে জ্যামিতিক হারে রোগীর পরিমান বাড়ছে সেইদিক বিবেচনা করলে খুব দ্রুত এগুলো আরও ক্রয় করতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই । তবে তার আগে অতি সঙ্কটাপন্ন রোগীদের দ্রুত অক্সিজেন সরবারেহর জন্য উন্নত মাস্ক,কেনোলা ও প্রয়োজনে হাই-ফ্লো নজেল কেনোলা ক্রয়ের জন্য আমি জরুরী ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি, এছাড়াও এক্ষেত্রে উন্নত বিপেট ও পিপেট ক্রয়ের ব্যাপারও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । যদি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আরও বেশী পরিমাণে আইসিইউ স্থাপন ও ভেন্টিলেটর ক্রয়ের বিষয়টি অতি বিবেচনায় রেখে দ্রুত হাই-ফ্লো নজেল কেনোলা সহ বর্ণিত সকল উন্নত অক্সিজেন ডিভাইস পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রয়ের ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে খুব দ্রুত করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আমি মনে করি । এক কথায়, যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের মাঝে পারস্পরিক সমন্বয় ও সমঝোতা বৃদ্ধি করতেই হবে নয়ত সকলের আন্তরিকতা ও অভিজ্ঞতা থাকা স্বত্বেও শুধুমাত্র পারস্পরিক সমন্বয় ও সমঝোতার স্বল্পতার জন্য আমাদেরকে শেষপর্যন্ত হয়ত হেরে যেতে হবে । আশাকরি দেশের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসকল বিষয়ে আন্তরিকতা ও নজরদারি দ্রুত বৃদ্ধি করবেন ।
(৮) এম. আনিছুর রহমান- দীর্ঘ কর্মময় জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে এই সংকট মুহুর্তে আপনার চমৎকার বক্তব্য, পরামর্শ ও আন্তরিকতার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ । আশাকরি, আপনার এই নির্দেশনায় দেশের প্রতিটি নাগরিকই নিজ সুরক্ষায় আরও সচেতন হবে এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও প্রস্তাবিত সকল বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে শতভাগ সততার সহিত অবগত করবে । পরিশেষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক সহযোগীতা আরও বৃদ্ধিকরণের মাধ্যমে এই যুদ্ধে আবারও জিতে যাবে বাঙ্গালী ।
* ডা: মো: টিটো মিঞা- যথাসময় জনসংযোগের পক্ষ থেকে যথার্থ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ ।
বি:দ্র: - দেশের প্রতিটি নাগরিকের জাতীয় স্বার্থে করোনা বিষয়ক বহুল স্বীকৃত ও সঠিক তথ্যভিত্তিক এই স্বাক্ষাৎকারটি আপনাদের প্রত্যেকের টাইমলাইনে শেয়ার করে জাতীয় কল্যাণে অবদান রাখার জন্য সবাইকে বিনীত অনুরোধ করা গেল । আশাকরি আপনাদের প্রতিটি শেয়ার এ বিষয়ে মানুষকে ভুল তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্ত হওয়া থেকে বিরত রেখে সঠিক তথ্যের মাধ্যমে পূর্ণ গণসচেতনতা বৃদ্ধি করবে । ধন্যবাদ ।
অনুরোধক্রমে -
মো: জাহিদুজ্জামান সাইদ (সম্পাদক-এন্ট্রাপ্রেনর বাংলাদেশ ও সভাপতি-BFJA) এবং এম আনিছুর রহমান (সম্পাদক-জনসংযোগ.কম ও সাধারণ সম্পাদক-BFJA).
Associated by -
* Bangladesh information & cultural friendship council (b-icfc), * Rainforest Real estate (Ltd) and * Eye Contact media (pvt) Ltd.
পাঠকের মন্তব্য